ঐতিহ্যবাহী ‘মধুমিতা’ সিনেমা হল বন্ধ হচ্ছে না, সিদ্ধান্ত বদলালো কর্তৃপক্ষ
দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল ‘মধুমিতা’ ঈদের পর চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে—এই খবর প্রকাশের পর থেকেই চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সিনেমা হলটি চালু রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে নানা পোস্ট দেখা যায়। অবশেষে সেই দুঃসংবাদ উল্টে দিলেন ‘মধুমিতা’র কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ। সিদ্ধান্ত বদলে হলটি চালু রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

হল বন্ধের ঘোষণায় হতাশা, সিদ্ধান্ত বদলের পর স্বস্তি
গত কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল যে ‘মধুমিতা’ ঈদের পর স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি মালিকপক্ষও এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছিল যে সিনেমা হল ব্যবসার মন্দার কারণে ভবিষ্যতে এটি আর চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে সিনেমাপ্রেমীদের আবেগ ও বিভিন্ন মহলের আলোচনার পর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেছে। গণমাধ্যমকে ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন,
"পরিচালনা পর্ষদের সবাই মিলে ‘মধুমিতা’ হল নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করা হয়। এরপর সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আপাতত হল বন্ধ করা হচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে যদি এমন কিছু করতে হয়, তাহলে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সবাইকে জানানো হবে।"
কেন বন্ধ হওয়ার কথা উঠেছিল?
দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের মন্দাভাব নতুন কিছু নয়। এক সময় দেশের প্রধান বিনোদন মাধ্যম ছিল সিনেমা, কিন্তু ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও বিদেশি কনটেন্টের জোয়ারে দেশীয় চলচ্চিত্রের ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ‘মধুমিতা’র কর্ণধার নওশাদ জানান, হলটি আধুনিকায়নের জন্য কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও লাভের মুখ দেখেননি। তাঁর ভাষায়,
"আমি আশা করেছিলাম যে আমার বাবার হাত ধরে শুরু হওয়া এই ব্যবসা আঁকড়ে ধরে রাখতে পারব। কিন্তু দেশে সিনেমার বাজারের যে অবস্থা, তাতে এখন আর আগের মতো আশা করি না।"
এ কারণে ‘মধুমিতা’ সিনেমা হলের স্থলে একটি মাল্টিপ্লেক্স নির্মাণের কথা ভাবা হয়েছিল। এমনকি একটি ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে গিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতত সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে তারা।

ঈদে ‘মধুমিতা’তে শাকিব খানের ‘বরবাদ’
আগামী ঈদুল ফিতরে ‘মধুমিতা’ সিনেমা হলে মুক্তি পাবে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। দেশীয় সিনেমার সুদিন ফেরানোর আশায় হলটির কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
১৯৬৭ সালের ১ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করা ‘মধুমিতা’ দেশের সিনেমার ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়। হলটি চালু রাখার সিদ্ধান্ত চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য নিঃসন্দেহে স্বস্তির খবর। এখন দেখার বিষয়, সামনের দিনে দেশীয় সিনেমার বাজার কতটা ঘুরে দাঁড়ায়।
📌 আপনি কি চান ‘মধুমিতা’ সিনেমা হল টিকে থাকুক? আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন!