বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না – কেন ও কীভাবে?

বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না

ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নাবালকদের জন্য নতুন নিয়ম: বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না!

 Facebook

সোশ্যাল মিডিয়ার নিরাপত্তা ও নতুন বিধিনিষেধ

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম প্রতিনিয়ত তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করছে। বিশেষ করে, নাবালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেটা (Meta) নতুন নিয়ম চালু করেছে।

এখন থেকে ১৮ বছরের নিচে কেউ বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়া ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না। অস্ট্রেলিয়ার পর এবার ভারতেও এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তে কিছু সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে।

নতুন নিয়ম কী বলছে?

✅ ১৮ বছরের নিচে অ্যাকাউন্ট খুলতে অভিভাবকের অনুমতি লাগবে

আগে অনেকেই বয়স বাড়িয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতেন, তবে এবার থেকে প্রমাণ হিসেবে বয়সের নথি জমা দিতে হবে। ফলে কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না।

✅ ১৬ বছরের কম বয়স হলে অ্যাকাউন্টের কন্ট্রোল থাকবে অভিভাবকের হাতে

যদি নথি অনুযায়ী বয়স ১৬ বছরের কম হয়, তবে বাবা-মা বা অভিভাবক সেই অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

✅ অভিভাবকরা সন্তানের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন

সন্তান কাদের সঙ্গে কথা বলছে, তা দেখা যাবে (তবে মেসেজের কন্টেন্ট দেখা যাবে না)।

কতক্ষণ ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুক ব্যবহার করবে, সেটি ঠিক করতে পারবেন অভিভাবকরা।

নতুন নিয়মের সুবিধা ও অসুবিধা

✅ সুবিধা:

  • নাবালকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা
  • অপ্রাপ্তবয়স্করা অনুপযুক্ত কনটেন্ট থেকে দূরে থাকবে।
  • সাইবার বুলিং ও অনলাইন হুমকি থেকে রক্ষা পাবে।
  • অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণ থাকবে
  • বাবা-মা তাদের সন্তানদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
  • শিশুদের অনলাইন আসক্তি কমবে ও পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ বাড়বে।
  • বয়স ভেরিফিকেশন বাধ্যতামূলক হওয়ায় ভুয়া অ্যাকাউন্ট কমবে
  • সাইবার অপরাধ কমবে।
  • অনলাইন নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।

❌ অসুবিধা:

  • গোপনীয়তার সমস্যা
  • নাবালকদের জন্য এটি গোপনীয়তা সংকটের কারণ হতে পারে।
  • সকল কার্যক্রম অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণে থাকলে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হ্রাস পেতে পারে।
  • প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ
  • বয়স যাচাই করতে অতিরিক্ত তথ্য জমা দিতে হতে পারে, যা অনেকের জন্য সমস্যা হতে পারে।
  • কিছু ব্যবহারকারী VPN বা অন্য পদ্ধতি ব্যবহার করে নিয়ম এড়িয়ে যেতে পারে।

কেন এই নতুন নিয়ম প্রয়োজন?

বর্তমানে নাবালকরা অনলাইনে বিভিন্ন বিপদে পড়তে পারে, যেমন—

✅ সাইবার বুলিং (Cyber Bullying)

✅ অনুপযুক্ত কনটেন্টে প্রবেশ

✅ ডিজিটাল আসক্তি বৃদ্ধি

✅ প্রতারণা ও হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়া


নতুন নিয়মের ফলে এসব ঝুঁকি কমবে এবং নাবালকদের সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে।

সাধারণ মানুষের মতামত আহ্বান

ভারত সরকার এই নতুন নিয়ম নিয়ে জনগণের মতামত চেয়েছে। সরকারি ওয়েবসাইটে সাধারণ জনগণ মতামত প্রকাশ করতে পারছেন।

উপসংহার

নাবালকদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নতুন বিধিনিষেধ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যদিও এটি গোপনীয়তা ও প্রযুক্তিগত কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, তবে এটি সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো নিরাপদ ও উপকারী করতে হলে অভিভাবকদেরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এভাবে সন্তানের ডিজিটাল জীবন নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে।

About the author

Daud
Hey! I'm Daud, Currently Working in IT Company BD. I always like to learn something new and teach others.

Post a Comment

To avoid SPAM, all comments will be moderated before being displayed.
Don't share any personal or sensitive information.