আজ থেকে অনলাইনে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক
আজ থেকে দেশের সব করদাতাকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন)ধারী রয়েছে। করযোগ্য আয় থাকলে টিআইনধারীদের রিটার্ন দায়িত্ব পালন করতে হয়।
গতকালের উদ্যোগ ও অনলাইন রিটার্নের সম্প্রসারণ
গত বছর কিছু নির্দিষ্ট এলাকার ব্যক্তিগত করদাতা, সারা দেশের ব্যাংক কর্মীবৃন্দ ও কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। তখন ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন।
কোথায় রিটার্ন দেবেন
সব করদাতা ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন নির্ধারিত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে জমা দেবেন। রিটার্ন জমার আগে করদাতাকে নিবন্ধন নিতে হবে।
নিবন্ধনের জন্য দরকারি তথ্য
নিবন্ধনের জন্য করদাতার নিজস্ব টিআইএন এবং বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর লাগবে। এই দু’টি ব্যবহার করে নিবন্ধন করলে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে এবং জমা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তি রসিদ পাওয়া যাবে।
কীভাবে রিটার্ন দেবেন
অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় কোনো কাগজপত্র আপলোড করা বাধ্যতামূলক নয় — কেবল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলোর তথ্য অনলাইনে দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, চাকরিজীবীরা তাদের আয় বা বেতনের প্রমাণ হিসেবে এক বছরের ব্যাংক লেনদেন বিবরণী (স্টেটমেন্ট) ব্যবহার করতে পারেন।
প্রয়োজনীয় ব্যাঙ্ক ডেটা
ব্যাংক স্টেটমেন্টে দেখাতে হবে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের (আগের বছরের ১ জুলাই থেকে পরের বছরের ৩০ জুন) সময়কার সম্পূর্ণ স্থিতি, সুদসংক্রান্ত তথ্য এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর।
কীভাবে কর পরিশোধ করবেন
করদাতারা ঘরে বসেই অনলাইনে নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে কর পরিশোধ করতে পারবেন:
ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ বা অন্য কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাপ।
সেবা ও সহায়তা
অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় কোনো সমস্যা হলে রাজস্ব বোর্ডের কর্মীরা কল সেন্টার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সহায়তা প্রদান করবেন, যাতে সমস্যাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান হয়।
রিটার্ন জমার সময় কোন কোন দলিলের তথ্য লাগবে
রিটার্ন পূরণের জন্য ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী কিছু কাগজপত্রের তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে হবে। এসব কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে:
- বেতন খাতের আয়ের দলিল
- সিকিউরিটিজের ওপর সুদ আয়ের সনদ
- ভাড়ার চুক্তিপত্র
- পৌরকরের রসিদ
- বন্ধকি ঋণের সুদের সনদ
- মূলধন সম্পদের ক্রয়/বিক্রয়ের চুক্তিপত্র ও রসিদ
- মূলধনের ব্যয়ের আনুষঙ্গিক প্রমাণপত্র
- শেয়ারের ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট
- সোর্সে কর কর্তনের সার্টিফিকেট (TDS সার্টিফিকেট)
বিনিয়োগ করে কর রেয়াত নিতে চাইলে
যদি কারো বিনিয়োগের মাধ্যমে কর রেয়াত নিতে হয়, তবে নিচের ধরনের প্রমাণপত্র লাগবে:
- জীবনবিমার প্রিমিয়াম রসিদ
- ভবিষ্য তহবিলে দেওয়া চাঁদার সনদ
- ঋণ বা ডিবেঞ্চার ও সঞ্চয়পত্রের প্রমাণ
- শেয়ারে বিনিয়োগের কাগজপত্র
- ডিপোজিট পেনশন স্কিম (DPS) জমার রসিদ
- কল্যাণ তহবিল-গোষ্ঠী বিমা ইত্যাদির চাঁদার সনদ
- জাকাত তহবিলে প্রদত্ত অনুদানের রশিদ
সংক্ষিপ্ত ট্যাকআউট
সারমর্ম: এখন থেকে সকল করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক। নিবন্ধনের জন্য টিআইএন ও বায়োমেট্রিক মোবাইল নম্বর লাগবে। কাগজপত্র আপলোড নয় — কেবল তাদের তথ্য দিন, অনলাইনেই কর পরিশোধ করুন এবং স্বয়ংক্রিয় রসিদ পেয়ে যান।