
ঢাকা মেট্রোরেলে ভাড়া ছাড়: কারা পাবেন এবং কত শতাংশ?
বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল শুধু দ্রুতগতির ও আরামদায়ক পরিবহন ব্যবস্থা নয়, এটি কিছু বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ভাড়া ছাড়ের সুবিধাও প্রদান করে। বিশেষ শ্রেণির মানুষের জন্য এই সুবিধাগুলো সমাজের প্রতি মেট্রোরেলের দায়বদ্ধতার প্রমাণ। আসুন, বিস্তারিত জেনে নিই কারা এই সুবিধা পাবেন এবং কত শতাংশ ছাড় পাওয়া যায়।
যাদের জন্য মেট্রোরেলে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ
১. যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা
যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে মেট্রোরেলে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।
- এই সুবিধা শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধার জন্য প্রযোজ্য।
- পরিবারের অন্যান্য সদস্য বা আত্মীয়-স্বজন এই সুযোগ পাবেন না।
- মুক্তিযোদ্ধার পরিচয়পত্র হস্তান্তরযোগ্য নয়।
বিশেষ ভাড়া ছাড়ের নিয়মাবলী
২. এমআরটি পাস বা র্যাপিড পাসে ১০% ছাড়
যাত্রীগণ এমআরটি পাস বা র্যাপিড পাস ব্যবহার করে প্রতি যাত্রায় ১০% ডিসকাউন্ট পাবেন।
- এটি সাধারণ যাত্রীদের জন্য ভাড়া সাশ্রয়ের অন্যতম একটি সুবিধা।
- পাস ব্যবহার করলে প্রতিবার ভাড়ার উপর ছাড় প্রযোজ্য হবে।
৩. ৯০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত শিশুদের বিনামূল্যে ভ্রমণ
৯০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উচ্চতার শিশু অভিভাবকের সঙ্গে মেট্রোরেলে বিনামূল্যে ভ্রমণ করতে পারবে।
- শিশুর উচ্চতা নির্ধারণের জন্য স্টেশনে মাপার ব্যবস্থা রয়েছে।
- শুধুমাত্র নির্ধারিত উচ্চতার শিশুরাই এই সুবিধা পাবে।
৪. বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ১৫% ছাড়
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিগণ বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে একক যাত্রার টিকেটে ১৫% ছাড় পাবেন।
- টিকেট শুধুমাত্র ঐ ব্যক্তিই ব্যবহার করতে পারবেন।
- পরিচয়পত্র বৈধ ও প্রমাণযোগ্য হতে হবে।
ভাড়া ছাড়ের নিয়মাবলী: যা মানতেই হবে
স্পেশাল টিকেট হস্তান্তরযোগ্য নয়
- ডিসকাউন্টযুক্ত টিকেট অন্য কাউকে দেওয়া বা হস্তান্তর করা যাবে না।
- যেমন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তির টিকেট অন্য কেউ ব্যবহার করলে তা অবৈধ গণ্য হবে।
পরিবার বা অন্য আত্মীয়দের জন্য প্রযোজ্য নয়
- যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়া ছাড়ের সুবিধা শুধুমাত্র তাদের জন্য।
- পরিবারের সদস্য বা পরিচিতরা এই সুবিধা নিতে পারবেন না।
টিকেট ফেরতযোগ্য নয়
- বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ১৫% ছাড়যুক্ত টিকেট ফেরতযোগ্য নয়।
- সিঙ্গেল জার্নি টিকিটও ফেরতযোগ্য নয়, তবে স্টেশনের কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে তা ফেরত নিতে পারেন।
উল্লেখযোগ্য দিকগুলো
অবৈধ ব্যবহার রোধে কঠোর ব্যবস্থা:
যদি কেউ হস্তান্তরযোগ্য নয় এমন টিকেট অন্যের জন্য ব্যবহার করার চেষ্টা করেন, তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।পরিচয়পত্র যাচাই:
বিনামূল্যে বা ছাড়যুক্ত ভাড়ার সুবিধা পেতে অবশ্যই বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।
শেষ কথা
মেট্রোরেল ভাড়া ছাড়ের সুবিধা কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষের জন্য, যা তাদের দৈনন্দিন যাত্রা আরও সহজ ও সাশ্রয়ী করতে সাহায্য করে। তবে এই সুবিধাগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা এবং নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে শুধু যাত্রীরা সুবিধা পাবেন না, বরং মেট্রোরেলের সার্বিক ব্যবস্থাপনাও সুষ্ঠু থাকবে।