শিশুদের গল্প, ছোট বাচ্চাদের গল্প, বাংলা গল্প, মজার ছোট গল্প, ছবি সহ গল্প
১. খরগোশ আর কচ্ছপ
একটা ছোট গ্রামে থাকত খুব দ্রুত দৌড়ানো খরগোশ। সে ছিল গাছপালা আর মাঠে খুব সক্রিয়। আর তার বন্ধু ছিল ধীর গতির কচ্ছপ। একদিন তারা ঠিক করল, একটি দৌড় প্রতিযোগিতা করবে। খরগোশ বলল, "আমি তো তোমাকে সহজেই হারিয়ে দেব।"
দৌড় শুরু হল। খরগোশ ঝটপট ছুটে গেল। সে এত দ্রুত দৌড়াচ্ছিল যে মাঝপথে তার মনে হল একটু বিশ্রাম নেওয়া যাক। তাই সে গাছের নিচে শুয়ে পড়ল।
অন্যদিকে কচ্ছপ ধীরে ধীরে কিন্তু অবিচলিতভাবে এগিয়ে চলল। সে কখনো হাল ছাড়ল না। অবশেষে সে শেষ লাইনে পৌঁছাল।
খরগোশ যখন ঘুম থেকে উঠল, দেখল কচ্ছপ তার থেকে অনেক দূরে পৌঁছে গেছে। সে খুবই লজ্জিত হল।
গল্পের শিক্ষা
ধৈর্য ধরলেই জয় পাওয়া যায়। এই গল্প আমাদের শেখায় কখনোই গর্ব বা অহংকার করে দ্রুত কাজ শুরু করলে মাঝপথে থেমে যাওয়া ঠিক নয়। ধৈর্য ধরে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
Related Posts
২. বিড়াল আর ময়ুর
একবার এক জঙ্গলে ছিল খুব চালাক বিড়াল। সে সবসময় নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করত। একদিন সে এক সুন্দর ময়ুরকে দেখল। ময়ুর তার সুন্দর রঙিন পালকগুলো ঝলমল করছিল। বিড়াল বলল, "তুমি খুব সুন্দর নাচো! তোমার পালকগুলোও খুব সুন্দর।"
ময়ুর খুব খুশি হল এই প্রশংসায়। তারা দুজন একসাথে অনেকক্ষণ কথা বলল এবং ধীরে ধীরে তারা ভালো বন্ধু হয়ে গেল।
এই বন্ধুত্বের জন্য তারা জঙ্গলের অন্য প্রাণীদের অনেক কিছু শেখাল—কিভাবে সবাই মিলে থাকতে হয়, কিভাবে একে অপরকে সম্মান করতে হয়।
গল্পের শিক্ষা
ভালো কথা বললে বন্ধুত্ব হয়। আমরা সবাই যেনো সদয় ও সম্মানজনক ভাষায় কথা বলি, তাহলে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সহজেই।
৩. ছোট মাছ মিঠু
নদীর তলদেশে ছিল মিঠু নামের একটি ছোট মাছ। মিঠু ছিল খুব সাহসী, কিন্তু সাঁতার কাটার দিক থেকে সে অনেক ধীর। সে সবসময় চেয়েছিল নদীর বড় বড় মাছদের মতো দ্রুত সাঁতার কাটতে।
প্রতিদিন মিঠু পরিশ্রম করত। সে ছোট ছোট অনুশীলন করত—ছোট পুকুরে সাঁতার কাটা, জলরাশি ফেলা, আর কখনো কখনো গভীর জলে যেত।
দিন যত গিয়েছিল, মিঠুর সাঁতার কাটার গতি বাড়তে থাকল। ধৈর্যের সঙ্গে পরিশ্রম করলে যে কেউ দক্ষ হতে পারে, সেটি মিঠু প্রমাণ করল।
গল্পের শিক্ষা
পরিশ্রম ও ধৈর্য দিয়ে সবাই সফল হতে পারে। কোন কাজই সহজে হয় না। নিয়মিত চেষ্টা করলেই ভালো ফল আসে।
৪. খেলাধুলার আনন্দ
সুব্রত আর রিমা দুইজন খুব ভালো বন্ধু। তারা প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরে একসাথে খেলাধুলা করত। একদিন তারা ঠিক করল ফুটবল খেলা হবে।
তারা খেলতে খেলতে অনেক আনন্দ পেল। হাসাহাসি করল, দৌড়ালো, এবং পরিশ্রম করল। খেলাধুলা শেষে তারা শক্তি পেল আর মনও ভালো থাকল।
তারা বুঝল, শুধু পড়াশোনা নয়, খেলাধুলাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে শরীর সুস্থ থাকে এবং মন ভালো থাকে।
গল্পের শিক্ষা
খেলাধুলা সুস্থ দেহ ও মন রাখে। ছোটদের জন্য নিয়মিত খেলাধুলা খুব উপকারী।
৫. ফুলের বন্ধুত্ব
এক বাগানে ছিল রঙিলা নামের একটি সুন্দর ফুল। রঙিলা সবসময় তার পাখি বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলত। তারা একসাথে গান গাইত, নাচত আর বাগানকে আরও সুন্দর করত।
ফুল আর পাখির বন্ধুত্ব দেখলে সবাই খুশি হত। তারা সবাই মিলে প্রকৃতিকে ভালোবাসত এবং একে অপরকে সাহায্য করত।
গল্পের শিক্ষা
বন্ধুত্ব এবং প্রকৃতির ভালোবাসা জীবন সুন্দর করে। আমাদেরও একে অপরের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে এবং প্রকৃতিকে সম্মান করতে হবে।
এই পাঁচটি ছোট গল্প থেকে আমরা শিখলাম ধৈর্য, পরিশ্রম, ভালো কথা বলা, খেলাধুলার গুরুত্ব ও বন্ধুত্বের মানে। শিশুদের জীবনেও এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা যখন ছোটবেলায় এসব শিক্ষা নেবে, তখন বড় হয়ে তারা ভালো মানুষ হবে।