CBTC কী?
CBTC (Communication-Based Train Control) একটি আধুনিক ট্রেন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যা ডিজিটাল কমিউনিকেশন ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রেনের গতি, অবস্থান ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি প্রচলিত সিগন্যালিং সিস্টেমের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত ও নির্ভরযোগ্য।
CBTC কিভাবে কাজ করে?
১. অনবোর্ড ইকুইপমেন্ট (Onboard Equipment )
প্রতিটি ট্রেনে একটি অনবোর্ড ডিভাইস থাকে যা ট্রেনের গতি ও অবস্থান নির্ধারণ করে এবং রিয়েল-টাইমে নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে তথ্য পাঠায়।
২. ওয়েসাইড ইকুইপমেন্ট (Wayside Equipment)
রেললাইন ঘেঁষে বসানো ডিভাইসগুলো ট্রেনের তথ্য গ্রহণ করে এবং তার নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করে।
৩. সেন্ট্রাল কন্ট্রোল সিস্টেম (Central Control System)
এটি সমস্ত ট্রেনের কার্যক্রম মনিটর করে, ট্রেনের সময়সূচি ও নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করে।
৪. ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication)
ট্রেন ও কন্ট্রোল সেন্টারের মধ্যে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি বা ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান হয়।
CBTC ব্যবস্থার সুবিধা
- ট্রেনের নিরাপদ ও নির্ভুল চলাচল নিশ্চিত করে।
- কম দূরত্বে একাধিক ট্রেন পরিচালনা করা যায়।
- স্বয়ংক্রিয় বা চালকবিহীন ট্রেন চালানোর সুযোগ থাকে।
- রেল ব্যবস্থার দক্ষতা ও সময় ব্যবস্থাপনা বৃদ্ধি করে।
CBTC ব্যবস্থার কিছু অসুবিধা
- উচ্চ খরচ: এই প্রযুক্তি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণে অনেক ব্যয়বহুল।
- উন্নত অবকাঠামোর প্রয়োজন: CBTC সিস্টেম কার্যকরভাবে চালাতে হলে নির্ভরযোগ্য কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ও পাওয়ার সাপ্লাই নিশ্চিত করতে হয়।
- সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি: যেহেতু এটি ডিজিটাল কমিউনিকেশনের ওপর নির্ভর করে, তাই হ্যাকিং বা সিস্টেমে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা থাকে।
- ট্রেনিং ও দক্ষ জনবল প্রয়োজন: এই প্রযুক্তি পরিচালনার জন্য উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী প্রয়োজন, যা সব সময় সহজলভ্য নাও হতে পারে।
- সিস্টেম বিভ্রাটে মারাত্মক সমস্যা: যদি কোনো কারণে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম ব্যর্থ হয়, তাহলে পুরো মেট্রোরেল চলাচল ব্যাহত হতে পারে।
CBTC প্রযুক্তি ঢাকার মেট্রোরেলে
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (MRT) লাইন-৬ এ CBTC সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে ট্রেনগুলো ৪-৫ মিনিট অন্তর নিরাপদভাবে চলতে সক্ষম। ভবিষ্যতে চালকবিহীন ট্রেন পরিচালনার সম্ভাবনাও রয়েছে।
উপসংহার
CBTC একটি স্মার্ট, নিরাপদ ও আধুনিক ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম যা শহরাঞ্চলের পরিবহন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনতে সক্ষম। ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে এই প্রযুক্তির ব্যবহার যাত্রীদের জন্য সময় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।