ফেসবুক-ইউটিউব (Facebook-Youtube) থেকে আয় করলে এখন ৭.৫% কর দিতে হবে, জানুন নতুন নিয়ম

আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী ফেসবুক, ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের বিদেশ থেকে আয়ে ৭.৫% কর কর্তন। ধারা ১২৪ ও ষষ্ঠ তফসিলের বিধান জানুন।

কনটেন্ট ক্রিয়েটর আয়কর, ফেসবুক আয় কর, ইউটিউব আয় কর, আয়কর আইন ২০২৩, ধারা ১২৪, বাংলাদেশ আয়কর, ডিজিটাল আয় ,ফেসবুক-ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের আয়কর: নতুন আইনে ৭.৫% কর কর্তন | বাংলাদেশ

ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েশন: বাংলাদেশের নতুন পেশা

বর্তমানে বাংলাদেশে ফেসবুক ও ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েট একটি পেশা। অনেকেই ফেসবুক, ইউটিউব, বা এই ধরনের সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহার করে অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা এবং অর্থ দুইটায় অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। ফেসবুক, ইউটিউব এর কনটেন্ট ক্রিয়েটরগণ তাদের পেজ অথবা চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের জন্য বিজ্ঞাপনদাতার অনুমতি প্রদান করে থাকে এবং বিনিময়ে বিজ্ঞাপনদাতারা বিজ্ঞাপনের আয়ের একটা অংশ কনটেন্টে ক্রিয়েটরগণের সাথে শেয়ার করেন। অর্থ্যাৎ ফেসবুক, ইউটিউবের কনটেন্ট ক্রিয়েটরেরা মূলত বিজ্ঞাপন থেকেই আয় করে থাকেন। এখন দেখা যাক, আয়কর আইন ২০২৩ এ বিষয়ে কি বলা হয়েছে।

Content

আয়কর আইনের ধারা ১২৪: বিদেশ থেকে প্রাপ্ত আয়

আয়কর আইনের ধারা ১২৪ অনুযায়ী:

"বিজ্ঞাপন বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে কোনো অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের জন্য ফি. সেবা চার্জ বা পারিশ্রমিক, তাহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন. বা যেকোনো নামে বা প্রকৃতির রেভিনিউ শেয়ারিং এর মাধ্যমে বিদেশ হইতে প্রেরিত অর্থ কোনো ব্যক্তির হিসাবে পরিশোধ বা জমা প্রদানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি প্রাপকের হিসাবে অর্থ পরিশোধ বা জমা প্রদানকালে উক্ত পরিশোধিত বা জমাকৃত অর্থের উপর ৭.৫% (সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ) হারে উৎকে কর কর্তন করিবেন।"

এই ধারাতে সুষ্পষ্ট হয় যে, কনটেন্ট ক্রিয়েটরেরা ফেসবুক, ইউটিউবে বা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ফেসবুক এডস, গুগল এডসেন্স বা অন্য কোন এড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যে আয় করেন, সেই আয়ের অর্থ বিদেশ থেকে আসলেও তা করমুক্ত আয় নয়।

আরও পড়ুন:অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন কীভাবে | Online Tax Return

আয়কর আইনের অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ধারা

  1. ধারা ১৬৩(২)(খ)

    আয়কর আইনের ধারা ১৬৩(২)(খ) এ যে কর কর্তন বা সংগ্রহকৃত কর হিসাবে গণ্য হবে তার ভিতর ধারা ১২৪ ও অন্তর্ভুক্ত।

  2. ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ১ এর দফা ১৭

    ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ১ এর দফা ১৭ এর বিধান অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েটরেরা নিবাসী করদাতা হিসাবে বাংলাদেশে অবস্থান করায় বিদেশে উপার্জিত আয় হিসাবে গণ্য হবে না এবং তিনি বৈদেশিক রেমিটেন্সে যে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সেই সুবিধাও নিতে পারবেন না।

  3. আরও পড়ুন:আয়কর নির্দেশিকা ২০২৫–২০২৬ | NBR গাইড ও ডাউনলোড লিংক

    পুরনো ও নতুন আইনের পার্থক্য

    আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ১ এর ৩৩ এর iv এ ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট ও ম্যানেজমেন্ট হতে আয়কে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিলো কিন্তু আয়কর আইন ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ১ এর দফা ২১ এ তথ্য ও প্রযুক্তি খান সংশ্লিষ্ট যেসকল আয়কে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সেখানে ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট ও ম্যানেজমেন্ট কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

আরও পড়ুন:আয়কর পরিপত্র ২০২৫-২০২৬ | Income Tax Circular কর্তৃক প্রকাশিত নতুন কর নির্দেশিকা ও পরিবর্তনসমূহ

দ্বৈত কর চুক্তির সম্ভাবনা

বাংলাদেশের বাহিরে অর্জিত আয়ের জন্য দ্বৈত কর নীতি অনুসরণ করিয়া কর অব্যাহতি পাওয়া যায়, তবে সেক্ষেত্রে দ্বৈত করের বিষয়ে যথাযথ প্রমাণাদি এবং সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি থাকা আবশ্যক।

শেষকথা: করদাতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

পরিশেষে নতুন আয়কর আইন পর্যালোচনা করে বলা যায় যে, কনটেন্ট ক্রিয়েটরেরা ফেসবুক, ইউটিউবে বা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিদেশ থেকে যে আয় করেন তার জন্য কোন কর অব্যাহতির সুবিধা প্রাপ্ত হবেন না। করযুক্ত আয়ের সাথে কনটেন্ট ক্রিয়েটরেরা ফেসবুক, ইউটিউবে বা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বৈদেশিক আয়ও সংযুক্ত হবে এবং ধারা ১২৪ অনুযায়ী ব্যাংক উক্ত অর্থ প্রাপকের একাউন্টে জমা করার সময় ৭.৫% হারে উৎসে কর কর্তন করবেন। এছাড়া আয়কর আইনের ধারা ১৬৩ অনুযায়ী উৎসে কর্তনকৃত কর নূন্যতম কর হিসাবে গণ্য হবে।

About the author

Leo
Hey! I'm Leo. I'm always eager to learn new things and enjoy sharing my knowledge with others.

Post a Comment

To avoid SPAM, all comments will be moderated before being displayed.
Don't share any personal or sensitive information.