ওয়েবসাইট হোস্টিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সময় বিভ্রান্তিকর হতে পারে — বিশেষ করে যখন শুনতে পান “Shared Hosting” আর “VPS Hosting”। আসলে এই উভয়ের মাঝে কী পার্থক্য, কখন কোনটি ব্যবহার করবেন, কতোটা খরচ আসতে পারে, পারফরম্যান্স ও সিকিউরিটি কেমন থাকে — এগুলোই আমরা এই নিবন্ধে সহজ ভাষায়, বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করব। নিচের প্রতিটি অংশে উদাহরণ, তুলনা টেবিল এবং ব্যবহারিক পরামর্শ দেওয়া আছে যাতে আপনি নিজেই ঠিক করে নিতে পারেন কোন হোস্টিং আপনার প্রকল্পের জন্য উপযুক্ত।
প্রাথমিক ধারণা: হোস্টিং কি এবং কেন দরকার
প্রতিটি ওয়েবসাইটকে ইন্টারনেটে উপস্থিত রাখতে সার্ভার দরকার। সার্ভার হলো একটি শক্তিশালী কম্পিউটার যা আপনার সাইটের ফাইল, ডাটাবেস ও ইমেলগুলো সংরক্ষণ করে। হোস্টিং সার্ভিস প্রদানকারী (Hosting provider) আপনাকে সেই সার্ভারের জায়গা ও কনফিগারেশন দেয়। হোস্টিং না থাকলে আপনার সাইটকে কোনো মানুষই অনলাইন থেকে অ্যাক্সেস করতে পারবে না।
Shared Hosting কি? একটি সহজ পরিচিতি
Shared Hosting-এর ক্ষেত্রে একাধিক ব্যবহারকারীর (ওয়েবসাইট) একটি বড় সার্ভারের উপর একই OS/সফটওয়্যার ভাগ করে নেওয়া হয়। অর্থাৎ, সার্ভারের CPU, RAM, ডিস্ক স্পেস ইত্যাদি রিসোর্সগুলোหลาย ওয়েবসাইটের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। সাধারনত ছোট ব্লগ, পার্সোনাল সাইট বা নতুন স্টার্টআপে এটি জনপ্রিয় কারণ খরচ কম এবং ব্যবহার সহজ।
VPS Hosting কি? — Virtual Private Server-এর সংজ্ঞা
VPS মানে Virtual Private Server — এখানে একটি বড় সার্ভারকে ভার্চুয়ালি ছোট ছোট অংশে ভাগ করে প্রতিটি অংশকে আলাদা সার্ভার হিসেবে দেখানো হয়। প্রতিটি VPS-এর নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম, রিসোর্স কোটা (CPU, RAM, ডিস্ক আই/ও) থাকে। এটি Shared Hosting-এর তুলনায় অনেক বেশি কাস্টমাইজেবল এবং নিরাপদ; কারণ আপনার রিসোর্স অন্যদের সঙ্গে শেয়ার হয় না (বা সীমিতভাবে), ফলে পারফরম্যান্স বেশি নির্ভরযোগ্য হয়।
মূল পার্থক্য: Shared Hosting বনাম VPS Hosting
রিসোর্স নিয়ন্ত্রণ
Shared Hosting-এ রিসোর্স শেয়ার করা হয় — ফলে হঠাৎ করে আপনার সাইটে ট্রাফিক বাড়লে পারফরম্যান্স পড়ে যেতে পারে। VPS-এ নির্দিষ্ট রিসোর্স অ্যলোকেট করা থাকে, তাই আপনার সাইটে ট্রাফিক বাড়ার সময়ও নির্দিষ্ট রিসোর্স মেলে।
সিকিউরিটি ও আইসোলেশন
Shared Hosting-এ অন্যদের অ্যাক্টিভিটি আপনার সাইটকে প্রভাবিত করতে পারে — যেমন কোনো ভুল কনফিগারেশন বা ম্যালওয়্যার সার্ভারের উপর ছড়ালে আপনার সাইটও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। VPS-এ প্রতিটি ভিআইপিএস আংশিকভাবে আইসোলেটেড, তাই সিকিউরিটি বেশি শক্ত।
কাস্টমাইজেশন ও রুট অ্যাক্সেস
Shared Hosting-এ সাধারণত কাস্টমাইজেশনের সুযোগ সীমিত, কারণ সার্ভার অ্যাডমিন সেটিংস সবের জন্যই একই থাকে। VPS-এ আপনি রুট বা এডমিন অ্যাক্সেস পেয়ে সার্ভার লেভেলে কনফিগার করতে পারেন — উদাহরণস্বরূপ নিজস্ব প্যাকেজ ইনস্টল করা, কাস্টম ফায়ারওয়াল সেট করা ইত্যাদি।
দামে পার্থক্য
Shared Hosting অনেক সস্তা — মাসিক খরচ সাধারণত ন্যূনতম। VPS বেশি খরচ সাপেক্ষ কারণ আপনি নির্দিষ্ট রিসোর্স এবং কাস্টম কনফিগারেশনের জন্য পে করেন। তবে স্বল্প পর্যায়ে ব্যবসা বাড়লে VPS-এ আপগ্রেড করে আপনি ভালো রিটার্ন পেতে পারেন।
কখন Shared Hosting বেছে নেবেন? উপযুক্ত ব্যবহারিক ক্ষেত্র
আপনি যদি নতুন ব্লগ শুরু করছেন, ছোট ব্যক্তিগত প্রোফাইল সাইট বানাচ্ছেন, অথবা লো-ট্রাফিক বিজনেস সাইট চালাচ্ছেন — Shared Hosting আদর্শ। কারণ খরচ খুব কম, ব্যবস্থাপনা সহজ এবং অধিকাংশ হোস্টিং কোম্পানি এক-ক্লিক ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটলেশন, সিটিইয়ার/কন্ট্রোল প্যানেল (cPanel/Plesk) ইত্যাদি দেয়।
- ব্যক্তিগত ব্লগ ও পোর্টফোলিও
- ছোট ব্যবসার থিয়োরেটিক সাইট
- শিক্ষামূলক প্রজেক্ট ও পরীক্ষামূলক সাইট
তবে যদি আপনার সাইটে রেগুলার বাড়তি ট্রাফিক থাকে, ই-কমার্স সাইট চালাতে চান বা উচ্চ সিকিউরিটি দরকার — Shared Hosting তখন উপযুক্ত নয়।
কখন VPS Hosting বেছে নেবেন? উপযুক্ত ব্যবহারিক ক্ষেত্র
আপনি যদি উন্নত কাস্টমাইজেশন চান, উচ্চ ট্রাফিক সাইট (প্রতিদিন কয়েক হাজার ভিজিট), অনলাইন স্টোর, SaaS অ্যাপ্লিকেশন বা মাল্টিপল সাবডোমেইন নিয়ে কাজ করেন — VPS অধিক উপযোগী। VPS-এ রিসোর্স স্থিতিশীল থাকে, এবং সার্ভার কনফিগারেশন নিয়ে আপনি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পান।
- ই-কমার্স ওয়েবসাইট (বড় ট্রাফিক ও সিকিউরিটি দরকার)
- বিজনেস ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ও API সার্ভিস
- কাস্টম সার্ভার কনফিগারেশন প্রয়োজন এমন ডেভেলপমেন্ট
- বিস্তৃত ডাটাবেস অপারেশন/বড় মিডিয়া হোস্টিং
প্রযুক্তিগত তুলনা টেবিল (সারাংশ)
| বৈশিষ্ট্য | Shared Hosting | VPS Hosting |
|---|---|---|
| রিসোর্স কনট্রোল | সীমিত, শেয়ার করা | নির্দিষ্ট আলোকেশন (CPU/RAM/disk) |
| সিকিউরিটি | কম বেশি ঝুঁকিপূর্ণ (শেয়ারিং কারণে) | ভালো (আইসোলেশন) |
| কাস্টমাইজেশন | সীমিত | উচ্চ — রুট অ্যাক্সেস পাওয়া যায় |
| দাম | কম | উচ্চ (তবে বিভিন্ন স্তর থাকে) |
| উন্নয়ন ও কনফিগারেশন | সহজ—নির্বাচিত UI দিয়ে পরিচালিত | প্রফেশনাল—SSH/রুট পাবে |
| স্কেলিং | সীমিত—প্রধানত আপগ্রেড প্যাকেজে | আরামদায়ক—রিসোর্স বাড়ানো সহজ |
পারফরম্যান্স: সাইট লোডিং ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স
পারফরম্যান্স মূলত নির্ভর করে সার্ভারের রিসোর্স, ডাটাবেস অপটিমাইজেশন, CDN ব্যবহার ইত্যাদির উপর। Shared Hosting-এ যদি একই সার্ভারে হাই-ট্রাফিক সাইট থাকে, তবে আপনার সাইট স্লো হতে পারে। VPS-এ নির্দিষ্ট RAM ও CPU থাকার কারণে লোড টাইম সাধারণত কম। তবে VPS-এ সঠিক কনফিগারেশন না করলে সেটাও ধীর হতে পারে — তাই caching, CDN, অপ্টিমাইজড ইমেজ, ওয়েব সার্ভার কনফিগারেশন (NGINX/Apache) খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সিকিউরিটি বিবেচনা ও ব্যাকআপ পদ্ধতি
অনেক সময় Shared Hosting প্রোভাইডার মৌলিক সিকিউরিটি দেয় — যেমন সার্ভার লেভেল ফায়ারওয়াল, সফটওয়্যার প্যাচ, এবং কিছু বারংবার ব্যাকআপ। তবু VPS-এ আপনি নিজে নির্দিষ্ট সিকিউরিটি টুল ইন্সটল করতে পারবেন: SELinux/Fail2ban, কাস্টম ফায়ারওয়াল, নিয়মিত সিস্টেম আপডেট। ব্যাকআপ নীতি—দুই ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ: সাইটের ডাটাবেস ও ফাইল নিয়মিত ব্যাকআপ রাখা উচিত। VPS-এ নিজস্ব ব্যাকআপ কনট্রোল থাকে বা ক্লাউড-স্ন্যাপশট নেওয়া যায়।
প্রশাসনিক দক্ষতা ও ম্যানেজমেন্ট
Shared Hosting-এ সাধারণত হোস্টেড কন্ট্রোল প্যানেল (যেমন cPanel) দ্বারা সব কিছু GUI থেকে করা যায়—নতুন ডোমেইন সংযুক্তি, ইমেইল সেটিং, ডাটাবেস ইত্যাদি। VPS-এ যদি ম্যানেজড অপশন নেওয়া হয় তাহলে প্রোভাইডার সার্ভার ম্যানেজ করবে; কিন্তু আন-ম্যানেজড VPS নিলে আপনাকে সার্ভার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানতে হবে: SSH, সার্ভিস রিস্টার্ট, প্যাকেজ আপডেট, লোগ মনিটরিং ইত্যাদি।
খরচ বিশ্লেষণ: কোথায় কী বাজেট লাগবে
শেয়ার্ড হোস্টিং সাধারনত মাসে খুব কম খরচে পাওয়া যায় — প্রোমো দরে প্রায় $1–$5/মাস থেকে শুরু করে। VPS-এ খরচ প্যাকেজ অনুযায়ী বড়, সাধারণত $5–$80+/মাস। গুরুত্বপূর্ণ হলো: শুধু দাম দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন না — সাপোর্ট, আপটাইম SLA, ব্যাকআপ ও স্কেলিং বন্দোবস্তও খেয়াল করতে হবে। বড় ব্যবসার জন্য VPS বা ক্লাউড সার্ভারে বিনিয়োগ করলে লম্বা মেয়াদে বেশি লাভ হতে পারে।
সাধারণ ভুল ধারনা ও বাস্তবতা
“Shared Hosting মানেই সবসময় ধীর”
এটি সবসময় সত্য নয়। ছোট ট্রাফিক সাইটের জন্য ভালো কনফিগার করা Shared Host অনেক দ্রুত দিতে পারে। তবে উচ্চ ট্রাফিক বা রিসোর্স-ইনটেনসিভ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য Shared Hosting সীমাবদ্ধ থাকবে।
“VPS মোটেই ঝামেলামুক্ত নয়”
ভাইরে থেকে দেখা যায় VPS একটু টেকনিক্যাল, ঠিক; কিন্তু managed VPS সার্ভিস নিলে প্রোভাইডার সার্ভার ম্যানেজ করে—আপনি কেবল অ্যাপ্লিকেশন চালাবেন। তাই যদি আপনি ডেভেলপার না হন বা সার্ভার দেখাশোনা করতে না চান, managed VPS একটি ভাল compromise।
মাইগ্রেশন: Shared থেকে VPS-এ আপগ্রেড করার স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইড
আপনি যদি Shared Hosting থেকে VPS-এ যেতে চান, সাধারণত স্টেপগুলো হবে:
- নতুন VPS প্ল্যান সিলেক্ট করা — রিসোর্স প্রিডিকশন করে নিন (CPU, RAM, Disk)
- ব্যাকআপ নেওয়া — ডাটাবেস ও সব ফাইল লোকালি ডাউনলোড করুন
- ডোমেইন DNS আপডেট প্রস্তুত রাখা — TTL কম করুন মাইগ্রেশনের আগেই
- VPS-এ ওয়েব সার্ভার কনফিগার করা (Apache/Nginx), PHP/Python/DB ইন্সটল করা
- ফাইল ও ডাটাবেস রিস্টোর করা
- টেস্টিং — লোকাল hosts ফাইল দিয়ে টেস্ট করে নিন পূর্বে DNS ধরে না।
- DNS পয়েন্টিং উত্পাদনে নিয়ে আসা ও মনিটর করা আপটাইম ও লগস
একটি ভাল হোস্টিং প্রোভাইডার সাধারণত মাইগ্রেশন সার্ভিস দেয় — এটি নিলে ঝামেলা অনেক কমবে।
কোম্পানি ও সাপোর্ট: কোন সার্ভিস প্রোভাইডার বেছে নেবেন?
প্রোভাইডার নির্বাচনে মাথায় রাখুন: আপটাইম রেকর্ড, সাপোর্ট কনভেনিয়েন্স (চ্যাট/টিকেট/ফোন), ব্যাকআপ পলিসি, রাইট-টু-রেস্পন্স টাইম, রিভিউ ও ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা। ছোট সাইটের জন্য জনপ্রিয় শেয়ার্ড হোস্টিং কোম্পানি (বেশ কয়েকটি) ভালো সেবা দেয়; আর বড় ব্যবসার জন্য DigitalOcean, Linode, Vultr, AWS Lightsail, Google Cloud, অথবা managed VPS প্রদানকারী (e.g., Cloudways, Kinsta for WordPress) বিবেচনা করা যায়।
প্রযুক্তিগত টার্মিনোলজি (সহজ ভাষায়)
- Bandwidth — আপনার সাইট থেকে ডেটা কত পরিমাণে ট্রান্সফার হবে।
- Disk I/O — ডিস্ক পড়া/লেখার গতি; বিশেষ করে ডাটাবেসে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
- Uptime — সার্ভারের অনলাইন থাকার শতাংশ; 99.9% হল সাধারণত ভালো।
- SSD vs HDD — SSD দ্রুত কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ব্যয়বহুল; ওয়েবসাইটের জন্য SSD ভালো।
- Load — সার্ভারের বর্তমান কাজ বা চাপ; উচ্চ লোড পারফরম্যান্স সমস্যা সৃষ্টি করে।
কীভাবে সঠিক প্যাকেজ নির্বাচন করবেন — চেকলিস্ট
প্যাকেজ বেছে নেওয়ার সময় নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করুন:
- প্রাথমিক ট্রাফিক (প্রতিদিন/মাসে কত দর্শক আশা করছেন)
- অ্যাপ্লিকেশন টাইপ (স্ট্যাটিক ব্লগ, ডাইনামিক ওয়েব অ্যাপ, ই-কমার্স)
- ডাটাবেস ব্যবহার (জটিল সেলেক্ট/জয়েন থাকলে বেশি RAM দরকার)
- বাজেট (শুরুর খরচ এবং স্কেলিং খরচ)
- সিকিউরিটি ও ব্যাকআপ পলিসি
- সার্ভিস লেভেল এগ্রিমেন্ট (SLA) ও সাপোর্ট টাইম
প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুকূল রেকমেন্ডেশন
নতুন ব্লগ / পার্সোনাল সাইট
শেয়ার্ড হোস্টিং। কারণ ব্যয় কম, ব্যবস্থাপনা সহজ এবং সাধারণত কন্ট্রোল প্যানেল সুবিধা দেওয়া হয়।
উদ্যোগ-স্তরের ওয়েবসাইট / ই-কমার্স
VPS বা Managed VPS/Cloud — কারণ সিকিউরিটি, পারফরম্যান্স ও স্কেলিং দরকার।
ডেভেলপমেন্ট ও টেস্টিং এনভায়রনমেন্ট
ছোট প্রকল্পে লাইটওয়েট VPS ভালো; কারণ কনফিগারেশন কাস্টম করা যায়।
অর্থনৈতিক কৌশল: খরচ কমানোর উপায়
- শেয়ার্ড হোস্টিং-এ শুরু করে ট্র্যাফিক বাড়লে VPS-এ ধাপে ধাপে মাইগ্রেট করুন।
- ক্যাশিং ব্যবহার করুন (WP Super Cache, Varnish ইত্যাদি) যাতে সার্ভারের লোড কমে।
- CDN (Cloudflare, BunnyCDN) ব্যবহার করলে ব্যান্ডউইথ সাশ্রয় হয় ও গ্লোবাল পারফরম্যান্স বাড়ে।
- অপ্রয়োজনীয় প্লাগইন/সার্ভিস বন্ধ রাখুন যা রিসোর্স খায়।
রিয়েল-ওয়ার্ল্ড উদাহরণ (ক্যারেক্টারাইজড কেস)
ধরা যাক আপনি একটি ছোট অনলাইন স্টোর চালাচ্ছেন এবং প্রথম মাসে ৫০০–১,০০০ ভিজিট পেতেন — তখন Shared Hosting চালাতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি Black Friday বা সেল চলাকালীন ৫০,০০০ ভিজিট আশা করেন, তখন VPS বা ক্লাউড-অপশন দরকার হবে যাতে রেসপন্স টাইম ও ট্রানজেকশন স্থিতিশীল থাকে। আবার, যদি আপনি একটি SaaS অ্যাপ বানাচ্ছেন যেখানে ডাটাবেস অপারেশন রিয়েল টাইম—তবে শুরুতেই VPS/Cloud নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (এই অংশটি পরে ৫টি FAQ-এও থাকবে)
একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — "আমি কীভাবে জানব কখন Shared থেকে VPS-এ উঠব?" — সাধারণত যদি সার্ভারের লোড বা সাইট স্লো হয়ে পড়ে, বারবার downtime হয়, বা হঠাৎ ট্রাফিক spike-এ সাইট নষ্ট হয় — তখন সময় হয়েছে আপগ্রেড করার।
টেকনিক্যাল টিপস: Shared/ VPS উভয়ের জন্য
- সাইট অপ্টিমাইজ করুন: ইমেজ কমপ্রেস, CSS/JS মিনিফাই, lazy-load ইত্যাদি
- CDN ব্যবহার করুন গ্লোবাল লোড কমাতে
- নিয়মিত সিকিউরিটি স্ক্যান ও সফটওয়্যার আপডেট রাখুন
- ব্যাকআপ অটোমেটিক সেট করুন—রিস্টোর টেস্ট করে নিন
মোটের উপর সুপারিশ
শুরুতে যদি বাজেট সীমিত ও ট্রাফিক কম থাকে—শেয়ার্ড হোস্টিং নিন। যখন আপনার সাইট বাড়বে, ট্রাফিক বাড়বে বা কাস্টম সিকিউরিটি/কনফিগারেশন দরকার হবে — VPS-এ মাইগ্রেট করুন। VPS বেছে নিলে managed সার্ভিস নিয়ে নিলে ডেভেলপার না হলেও সুবিধা হবে। সবসময় লক্ষ্য রাখুন—আপনার ব্যবসার ভবিষ্যৎ চাহিদা অনুযায়ী হোস্টিং প্ল্যানের স্কেলেবিলিটি কেমন।
সংক্ষেপে — দ্রুত রেফারেন্স
- Shared Hosting: সস্তা, সহজ, ছোট সাইটের জন্য উপযুক্ত
- VPS Hosting: কাস্টমাইজেবল, নির্ভরযোগ্য, বড় সাইট/অ্যাপের জন্য ভাল
- আপনি কখন আপগ্রেড করবেন: স্লো পারফরম্যান্স, বারবার downtime, বড় ট্রাফিক spike
উপসংহার
Shared Hosting ও VPS Hosting—দুটোরই নিজস্ব সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা আছে। ব্যক্তিগত ব্লগ বা ছোট ব্যবসার জন্য Shared Hosting হলো অর্থনৈতিক এবং ব্যবহারবান্ধব সমাধান; আবার যখন আপনার সাইট প্রযুক্তিগতভাবে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ, নির্ভরযোগ্যতা ও নিরাপত্তা চায়, তখন VPS আপনার সেরা বিকল্প। গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার প্রকল্পের ধরন, টেকনিক্যাল দক্ষতা, এবং বাজেট বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। আর হ্যাঁ — যদি ভবিষ্যতে ট্রাফিক বাড়ে, মাইগ্রেশনের পথ সবসময় খোলা থাকলে আপনি আরামেই পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
প্রশ্নোত্তর (FAQs)
প্রশ্ন ১: Shared Hosting থেকে VPS-এ মাইগ্রেট করলে কি সবকিছু একইভাবে কাজ করবে?
উত্তর: সাধারণত হ্যাঁ—কিন্তু কিছু কনফিগারেশন পরিবর্তন লাগতে পারে। উদাহরণস্বরূপ PHP/DB ভার্সন, ফাইল পারমিশন, কোনো নির্দিষ্ট এক্সটেনশন ইত্যাদি। মাইগ্রেশনের আগে ব্যাকআপ নিয়ে এবং টেস্টিং করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রশ্ন ২: VPS কি আমি নিজেই ম্যানেজ করতে পারব? আর যদি না পারি?
উত্তর: হলে অবশ্যই পারবেন যদি আপনার সার্ভার অ্যাডমিনে কিছু অভিজ্ঞতা থাকে (SSH, প্যাকেজ ম্যানেজার, সার্ভিস কনফিগ)। না পারলে managed VPS বা হোস্টড সার্ভিস নিন — প্রোভাইডার সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণ করবে।
প্রশ্ন ৩: Shared Hosting-এ সাইট হ্যাক হলে আমার সাইট নিরাপদ থাকবে কি?
উত্তর: Shared Hosting-এ অন্য কোনও সাইটের মাধ্যমে সার্ভার-লেভেল সমস্যা হলে ঝুঁকি বাড়ে। ভালো সার্ভিস প্রোভাইডার নিয়মিত প্যাচ এবং সিকিউরিটি মনিটরিং দেয় — কিন্তু সাধারণ নিয়ম মেনে চলুন: প্লাগইন আপডেট রাখুন, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন, এবং নিয়মিত ব্যাকআপ রাখুন।
প্রশ্ন ৪: VPS-এ কেমন ব্যাকআপ পলিসি রাখা উচিত?
উত্তর: নিয়মিত (দৈনিক/সাপ্তাহিক) ব্যাকআপ রাখুন, এবং ব্যাকআপ লোকেশন আলাদা (যেমন ক্লাউড স্টোরেজ)। এছাড়া স্ন্যাপশট সুবিধা থাকলে তা ব্যবহার করুন। ব্যাকআপ থেকে দ্রুত রিস্টোর করার প্রক্রিয়া টেস্ট করে রাখুন।
প্রশ্ন ৫: ছোট ব্যবসা হলে Shared নাকি VPS কেন?
উত্তর: ছোট ব্যবসার সূচনায় Shared Hosting অর্থ-সাশ্রয়ী এবং পর্যাপ্ত। কিন্তু যদি আপনার ট্রানজেকশন, ইউজার ডেটা বা পারফরম্যান্স বেশি ক্রিটিক্যাল হয়, তাহলে VPS বা managed cloud সেবা বেছে নিন।