বিকাশ বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা MFS প্ল্যাটফর্ম। এটি সাধারণ মানুষকে মোবাইলের মাধ্যমে সহজে এবং দ্রুত আর্থিক লেনদেনের সুবিধা দিয়ে থাকে। শুধু একটি কোড ডায়াল করেই বা বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহক যেকোনো সময় তার পছন্দের সেবা গ্রহণ করতে পারেন।
বিকাশ একাউন্টের সুবিধাসমূহ
বিকাশ গ্রাহকদের জন্য নানান ধরনের আর্থিক সুবিধা দিয়ে আসছে। নিচে বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যেসব সেবা পাওয়া যায় তার একটি তালিকা দেওয়া হলো:
- ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট
- অ্যাড মানি ও সেন্ড মানি
- মোবাইল রিচার্জ
- পার্সোনাল লোন
- অনলাইন শপিংয়ের পেমেন্ট
- বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, শিক্ষা বিল পেমেন্ট
- ব্যাংক থেকে টাকা আনয়ন বা প্রেরণ
- কার্ডে টাকা ট্রান্সফার
- বিদেশ থেকে রেমিটেন্স গ্রহণ
- সরকারি-বেসরকারি ফি প্রদান
অন্যান্য পোস্টগুলো পড়ুন
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলতে এখন আর ব্যাংকে যেতে হয় না। আপনি চাইলে বাড়িতে বসেই স্মার্টফোনে বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করে সহজেই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলো:
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- নিবন্ধিত মোবাইল নাম্বার
- সেলফি ও এনআইডির উভয় পাশে ছবি

এই তথ্যগুলো বিকাশ অ্যাপে সাবমিট করার পর তারা যাচাই করে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাকাউন্ট অ্যাক্টিভ হয়ে যায়। এছাড়া চাইলে নিকটস্থ কোনো বিকাশ এজেন্টের সাহায্যেও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
বিকাশ অ্যাকাউন্টের ধরন
বিকাশ বিভিন্ন গ্রাহক শ্রেণির জন্য চার ধরনের অ্যাকাউন্ট অফার করে:
- পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট: সাধারণ ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য
- পার্সোনাল রিটেইল অ্যাকাউন্ট: ছোটখাটো ব্যবসার জন্য
- এজেন্ট অ্যাকাউন্ট: বিকাশের পক্ষ থেকে সেবা প্রদানকারীদের জন্য
- মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট: অনলাইন ও অফলাইন ব্যবসায়ীদের জন্য
প্রবাসীদের জন্য বিকাশ সুবিধা
প্রবাসীদের জন্য বিকাশ বিশেষভাবে তৈরি করেছে এমন সেবা যার মাধ্যমে তারা সরাসরি বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠাতে পারেন। এখন অনেক দেশে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খোলাও সম্ভব হয়ে উঠেছে, যা পরিবারকে দ্রুত অর্থ পাঠানোর প্রক্রিয়াকে সহজ করে দিয়েছে।
বিকাশ একাউন্ট সংক্রান্ত সমস্যা ও সমাধান
কখনো কখনো ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। সেক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো জানা জরুরি:
- নাম্বার পরিবর্তন: বিকাশ অ্যাকাউন্টের নাম্বার পরিবর্তন করা যাবে
- পিন রিসেট বা পরিবর্তন: ভুলে গেলে অথবা নিরাপত্তার জন্য পিন আপডেট করুন
- সিম হারালে করণীয়: বিকাশে অ্যাক্সেস পুনরুদ্ধার করতে হবে
- ভুল ট্রান্সফার: অন্য নাম্বারে টাকা গেলে ফিরিয়ে আনার নিয়ম আছে
- হ্যাকিং: সন্দেহজনক অ্যাক্টিভিটি দেখা গেলে দ্রুত হেল্পলাইনে যোগাযোগ
ব্যাংক ও বিকাশের মধ্যকার লেনদেন
বিকাশ বর্তমানে দেশের প্রায় সব প্রধান ব্যাংকের সাথে ইন্টিগ্রেটেড। এর ফলে আপনি চাইলে সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ইত্যাদি ব্যাংক থেকে বিকাশে বা বিকাশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে পারেন।
এছাড়া কিছু সীমিত সুবিধার মাধ্যমে বিকাশ থেকে রকেট বা নগদে ট্রান্সফারের ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। যদিও সরাসরি লেনদেন এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি, ভবিষ্যতে আরও সহজ হতে পারে।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
যদি কোনো কারণে আপনি বিকাশ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে চান, তাহলে নিকটস্থ বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে এনআইডি ও বিকাশ রেজিস্টার্ড ফোন নাম্বার প্রয়োজন হবে।
বিকাশ হেল্পলাইন নাম্বার
বিকাশ সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার সমাধানে যোগাযোগ করুন:
- হেল্পলাইন: 16247
- বিকল্প নম্বর: 02-55663001
সপ্তাহের যেকোনো দিন, ২৪/৭ এই হেল্পলাইনে যোগাযোগ করে আপনার সমস্যার দ্রুত সমাধান পেতে পারেন।