চুল কানি কমানোর ঘরোয়া উপায় – প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে দাদ ও ছত্রাকের চিকিৎসা

চুল কানি (দাদ) দূর করার জন্য ঘরোয়া উপায় ও প্রাকৃতিক প্রতিকার জেনে নিন। তুলসী, নিম, নারকেল তেলসহ সহজ পদ্ধতিতে ছত্রাক দূর করুন এবং মাথার ত্বক রাখুন
Rineworm

চুল কানি কমানোর ঘরোয়া উপায়

চুল কানি বা দাদ হলো এক ধরনের ছত্রাক জনিত সংক্রমণ, যা মাথার ত্বকে রিং আকারে লাল দাগ তৈরি করে এবং প্রচণ্ড চুলকায়। অনেকেই সরাসরি ওষুধ ব্যবহার করতে চান না। তাই আজ আমরা জানব কিছু প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায় যা চুল কানি কমাতে সহায়ক।

১. তুলসী পাতার রস

তুলসী পাতা প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাঙ্গাল। কিছু তাজা তুলসী পাতা নাও, ভালো করে ধুয়ে পেস্ট বানিয়ে রস বের করো। সেই রস আক্রান্ত স্থানে তুলা দিয়ে লাগিয়ে রাখো। দিনে ২-৩ বার লাগালে উপকার পাবে।

২. নিমের পাতা

নিমের পাতা ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসে দুর্দান্ত। কিছু নিম পাতা পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে আক্রান্ত স্থানে ধুয়ো। চাইলে নিম পাতা বেটে সরাসরি দাদেও লাগাতে পারো। এটি প্রদাহ কমায় এবং সংক্রমণ ছড়ানো আটকায়।

Related Posts

৩. হলুদ ও মধু

হলুদে আছে কারকিউমিন যা প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক। সামান্য হলুদ গুঁড়োর সাথে মধু মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখো। তারপর হালকা গরম পানিতে ধুয়ে ফেলো। দিনে একবার করো।

৪. নারকেল তেল ও লেবুর রস

নারকেল তেল ত্বক কোমল রাখে, আর লেবুতে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাঙ্গাল। সমপরিমাণ নারকেল তেল ও লেবুর রস মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে হালকা হাতে মালিশ করো। তারপর ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলো।

৫. এলোভেরা জেল

এলোভেরা ত্বকের প্রদাহ ও চুলকানি কমায়। তাজা এলোভেরার পাতা থেকে জেল বের করে সরাসরি দাদ বা চুল কানিতে লাগাও। দিনে দুইবার করো। এটি ত্বক ঠান্ডা রাখে।

৬. আক্রান্ত জায়গা পরিষ্কার রাখা

প্রতিদিন আক্রান্ত স্থানটি সাবান দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে রাখো। ভেজা থাকলে ছত্রাক আরও বেড়ে যায়। আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করো, অন্যের সাথে ভাগ কোরো না।

৭. গরম পানিতে কাপড় ধোয়া

তোমার বালিশের কাভার, তোয়ালে, চিরুনি ইত্যাদি গরম পানিতে ধুয়ে নাও। এতে ছত্রাক মরে যাবে এবং সংক্রমণ অন্যের কাছে ছড়াবে না।

৮. চুলে তেল ব্যবহার কমানো

দাদ হলে মাথায় তেল বেশি ব্যবহার কোরো না। এতে ছত্রাক আরও আরাম পায়। তবে অল্প নারকেল তেল লাগাতে পারো, সেটিও দিনে একবারের বেশি নয়।

৯. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাও

লেবু, কমলা, আমলকি ইত্যাদি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তখন দাদ দ্রুত ভালো হতে শুরু করে।

১০. ডাক্তারি চিকিৎসা নাও

যদি অনেকদিনেও দাদ না সারে, অথবা বেশি লাল, ফুলে ওঠে, পুঁজ হয় বা ব্যথা করে, তবে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাও। প্রয়োজন হলে ডাক্তার অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ বা শ্যাম্পু দেবেন।

উপসংহার

চুল কানি ঘরোয়া উপায়ে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে কখনোই ওষুধ ছাড়া থামিয়ে রেখো না। কারণ ছত্রাক একবার দেহে বাসা বাঁধলে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে প্রয়োজনে ডাক্তারি চিকিৎসা দরকার। ঘরোয়া প্রতিকারগুলো নিয়মিত করো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকো আর নিজের জিনিস অন্যের সাথে ভাগ কোরো না — তাতেই তুমি সুস্থ থাকবে।

About the author

Leo
Hey! I'm Leo. I'm always eager to learn new things and enjoy sharing my knowledge with others.

Post a Comment

To avoid SPAM, all comments will be moderated before being displayed.
Don't share any personal or sensitive information.