ব্যাংক থেকে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সকল এমএফএস ওয়ালেটে টাকা পাঠালে যা বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
সংক্ষেপ: এখন থেকে ব্যাংকের যেকোনো কার্ড ব্যবহার করে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সব ধরনের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ওয়ালেটে টাকা পাঠানো যাবে। এই সুবিধা আসছে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।
কি পরিবর্তন এসেছে?
আগে ব্যাংক থেকে মোবাইল ওয়ালেটে টাকা পাঠাতে আলাদা সেবা বা গেটওয়ে ব্যবহার করতে হতো। এখন ব্যাংকের যেকোনো কার্ড দিয়েই সরাসরি বিকাশ, নগদ, রকেটসহ যে কোনো এমএফএসে টাকা পাঠানো যাবে। এই নতুন ব্যবস্থায় পুরো সিস্টেমটি পরিচালিত হবে এনপিএসবি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত চার্জ
১. ব্যাংক থেকে ব্যাংক বা এমএফএসে টাকা পাঠানো
ব্যাংক থেকে যেকোনো ব্যাংক, এমএফএস বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারের (PSP) হিসাবে টাকা পাঠাতে প্রতি ১,০০০ টাকায় ১ টাকা ৫০ পয়সা চার্জ নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটি হবে সর্বোচ্চ সীমা—এর বেশি কোনো প্রতিষ্ঠান নিতে পারবে না।
২. এমএফএস থেকে ব্যাংক বা অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানো
বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো এমএফএস থেকে অন্য কোনো এমএফএস, ব্যাংক বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারে টাকা পাঠালে প্রতি ১,০০০ টাকায় সাড়ে ৮ টাকা (৳৮.৫০) খরচ দিতে হবে।
৩. পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (PSP) থেকে ব্যাংক বা এমএফএসে টাকা পাঠানো
যদি কোনো পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (যেমন PathaoPay, TAP ইত্যাদি) থেকে ব্যাংক বা এমএফএসে টাকা পাঠানো হয়, তাহলে প্রতি ১,০০০ টাকায় ২ টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে।
সুবিধা কখন থেকে পাওয়া যাবে?
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এই নতুন ইন্টার-অপারেবল লেনদেন ব্যবস্থা আগামী ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে। অর্থাৎ, ঐ দিন থেকে ব্যাংক কার্ড দিয়ে বিকাশ, নগদ, রকেট বা অন্যান্য এমএফএসে টাকা পাঠানো যাবে তাৎক্ষণিকভাবে।
এই পরিবর্তনে গ্রাহকের লাভ
- একটি মাত্র ব্যাংক কার্ড থেকেই যেকোনো ওয়ালেটে টাকা পাঠানো যাবে।
- লেনদেন ফি কমে যাবে।
- সময় ও প্রক্রিয়া দুটোই সহজ হবে।
- ক্যাশ আউট বা এজেন্ট নির্ভরতা কমবে।
- ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহক আরও উৎসাহিত হবে।
ইন্টার-অপারেবল লেনদেনের প্রভাব
এই ব্যবস্থার মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়বে এবং দেশের পেমেন্ট ইকোসিস্টেম আরও শক্তিশালী হবে। আগে যেমন এমএফএসগুলোর মধ্যে লেনদেন সীমাবদ্ধ ছিল, এখন এনপিএসবি সব ব্যাংক ও এমএফএসকে এক ছাতার নিচে আনবে। ফলে নগদ প্রবাহ আরও দ্রুত হবে এবং আর্থিক খাতে ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত হবে।
সারসংক্ষেপ (টেবিল আকারে)
লেনদেনের ধরন | প্রতি ১,০০০ টাকায় চার্জ |
---|---|
ব্যাংক → ব্যাংক / এমএফএস / পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার | ৳১.৫০ |
এমএফএস → ব্যাংক / এমএফএস / পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার | ৳৮.৫০ |
পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার → ব্যাংক / এমএফএস | ৳২.০০ |
শেষ কথা
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে এক বড় মাইলফলক। ২০২৫ সালের নভেম্বর থেকে গ্রাহকরা ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করে সহজে যেকোনো এমএফএস ওয়ালেটে টাকা পাঠাতে পারবেন, খুবই কম খরচে। ফলে নগদ অর্থ লেনদেনের উপর নির্ভরতা আরও কমবে এবং ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার আরও দ্রুত ঘটবে।
সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক